ডিজাইনারের ক্যারিয়ার নষ্ট হওয়ার ৬ টি গুরুত্বপূর্ণ কারণ
আমরা জানি গ্রাফিক ডিজাইনাররা কোন কোম্পানীর পণ্যের বিজ্ঞাপন বা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। তাই ডিজাইনাররা যথেষ্ট সতর্কতার সাথে এসব কোম্পানীর জন্য ব্রশিউর, বিজনেস কার্ড, লোগো, ডিজাইন করে। বিভিন্ন জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের লোগোর ডিজাইনের দিকে তাকালে দেখা যায়, এগুলো প্রথম দৃশ্যেই দর্শকবৃন্দ দ্বারা মূল্যায়ন হয়েছে। এসব লোগো ডিজাইন করার সময় ডিজাইনাররা ডিজাইনের নীতি, সুচিন্তিত, ব্র্যান্ডকে জনপ্রিয় করার বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। ডিজাইনের পাশাপাশি লোগোর টাইপফেস, কালার, সিম্বল এই সব বিষয়গুলো সতর্কতার সাথে বাছাই করতে হয়।
ই-লার্ন বাংলাদেশ এর ভিডিও টিউটোরিয়াল কোর্স করুন
বিভিন্ন বিষয় শিখতে এখন আর ট্রেনিং সেন্টারে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ভিডিও টিউটোরিয়াল নিয়ে ঘরে বসেই শিখুন বিভিন্ন ধরনের প্রফেশনাল মানের কাজ।
বিস্তারিত পড়ুন
সেই জন্য একজন দক্ষতা সম্পূর্ণ ডিজাইনারের সুচিন্তিত ও অনবদ্য কাজ ব্র্যান্ডের সাফল্য অর্জনে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে। আজকে আমি গ্রাফিক ডিজাইনারদের যে ৬ টি ভুল কাজ ডিজাইনারের ক্যারিয়ারকে নষ্ট করতে পরে। সেই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি। চলুন শুরু করি........
ক্লায়েন্টের নির্দেশনা না বুঝতে পারাঃ
ডিজাইনারর এবং ক্লায়েন্টের মধ্যকার কমিউনিকেশন বা আলোচনার ব্যাপারটি অনেক ক্ষেত্রেই জটিলতায় রুপ ধারণ করে। পরিণামে ক্লায়েন্টের মনমতো ডিজাইন দিতে ডিজাইনাররা ব্যর্থ হয়। তাই প্রত্যেক ডিজাইনারের উচিত যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি ক্লায়েন্টের নির্দেশনা বুঝতে পারছেন ততক্ষণ পর্যন্ত ক্লায়েন্টের সাথে কমিউনিকেশন করা, এবং ডিজাইন বুঝে নেয়া।
অধিক ফন্ট ব্যবহারঃ
ডিজাইন করার সময় একের অধিক ফন্ট ব্যবহার করা যাবে না। অধিক ফন্টের ব্যবহারে পাঠক সাধারণের জন্য বিরক্তিকর । আর যদি বড় কোনো লেখা হয় তহলে তো কথাই নেই। একটি লেখাতে একের অধিক ফন্ট পাঠকের দৃষ্টিপাত সাময়িক বিরতি ঘটায়। তাই সাধারণত কোনো ডিজাইনের জন্য তিনটি ফন্ট মানানসই। দুইটি ফন্ট ডিজাইনের জন্য অনেক ভালো। আর একটি ফন্ট কোনো ডিজাইনের নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিজনেস কার্ড ডিজাইনের সময় ফন্ট সিলেকশনের ব্যাপারটি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হয়। কারণ সেখানে স্থান এমনিতেই অনেক কম।
গ্রাফিক ডিজাইন শিখে অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়তে ভিডিও টি দেখুন
আরও ভিডিও
বিজ্ঞাপন
নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দেয়াঃ
একটি ডিজাইন করার সময় ডিজাইনাররা নিজের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে এটি ডিজাইনারদের একটি বড় ভুল। একজন ডিজাইনারকে ডিজাইনের সময় সবার কথা চিন্তা ভাবনা করতে হবে। ডিজাইনারকে মনে রাখতে হবে তার করা ডিজাইন হাজার হাজার মানুষের কাছেও লক্ষণীয় ও পছন্দের হতে হবে। তাই ডিজাইন শেষ করে ডিজাইনারকে একজন তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে ডিজাইনটি পরীক্ষা করে দেখা হবে যে ডিজাইনটি মানুষের কাছে কেমন লাগবে। কোনো ভুল থাকলে সংশোধন করে ক্লায়েন্টকে ডিজাইন জমা দিতে হবে।
সময়ের আগে কাজ শেষ করতে না পারাঃ
আমদের দেশে অনেক ডিজাইনার আছেন যারা ক্লায়েন্টের নির্দিষ্ট সময়সীমার আগে কাজ শেষ করার অঙ্গীকার করে। অথবা খুব অল্প সময় হাতে নিয়ে কাজ শেষ করার অঙ্গীকার করে। মূলত ডিজাইনের ব্যাপারটি ‘ধর তক্তা, মার পেরেক’ টাইপের নয়। আপনি যত সময় নিয়ে ডিজাইন করবেন ডিজাইনটি তত লক্ষণীয় হবে। আপনি ক্লায়েন্টকে আগে বলবেন যে আপনি যথেষ্ট সময় হাতে নিয়ে ডিজাইনটি করেন। এতে করে ক্লায়েন্টের মনে কোন সন্দেহ বা অনিশ্চয়তা থাকে না। এবং আপনাকে কাজটি দ্রুতবেগে করতে হবে না।
ডিজাইন অতিরিক্ত জটিল করে ফেলাঃ
কাজের সময় ডিজাইন অতিরিক্ত জটিল করে ফেলা ডিজাইনারদের তেমন বড় ভুল নয়। তবে, এর কারণে যে সমস্যা তৈরি হয় তা হলো শ্রোতাবৃন্দকে ব্র্যান্ডের ফোকাস পয়েন্ট থেকে দূরে সরিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে অ্যাডবি ফটোশপ ফিল্টার গুলো ব্যবহারের দিকে অধিকতর সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। ব্রশিউর ডিজাইনের সময় কালার, ফন্ট, ইমেজ প্রভৃতি স্বল্প মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে। মনে রাখতে হবে, সাধারণ মানের ডিজাইন কোম্পনির মূল ফোকাস পয়েন্ট গুলো বেশি ফুটে তুলতে সহায়তা করে।
স্টক ইমেজের ব্যবহারঃ
অনেক সময় আমরা ডিজাইন করার গিয়ে অতিরিক্ত স্টক ইমেজ ব্যবহার করে থাকি। এই কারণে আমদের ডিজাইন প্রফেশনাল মনে হয় না। ডিজাইনে স্টক ইমেজ থাকার কারণে পাঠক সাধারণ অনেক সময় বিরক্ত হয়। কারণ হিসাবে বলতে পারি এসব ইমেজে কোনো নতুন কিছু নেই, অথবা ইমেজেটি তারা আগে দেখে ফেলেছে। তাই কোনো ডিজাইনে ইউনিক ও নতুনত্ব আনতে স্টক ইমেজ ব্যবহার কমিয়ে পেইড ইমেজ ব্যবহার করতে হবে।
আমার মনে হয় কোন একজন গ্রাফিক ডিজাইনার সহজে উপরের ৬ টি ভুল সংশোধন করে একজন দক্ষতাপূর্ণ ও পেশাদারী লেভেলের ডিজাইনার হয়ে উঠতে পারেন খুব অল্প সময়ে। আর এই ভুল সংশোধন করতে তাকে তেমন কষ্ট করতে হবে না।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। লেখার মধ্যে কোন ভুল হলে কমেন্ট করে জানাবেন। ভালো থাকবেন সবাই।